মক্কা টু তায়েফের মাঝে পাথরের প্রাচীন মহাসড়কের সন্ধান

আমিরুল ইসলাম লুকমান
মক্কা ও তায়েফকে সংযুক্ত করেছে পাথরের একটি প্রাচীন মহাসড়ক। যাকে ‘কারওয়ান রুট’ বলা হয়ে থাকে। সড়কটি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। প্রায় এক হাজার বছর পূর্বে সড়কটি নির্মিত হয়েছিল। পদব্রজে চলাচলকারীরা ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত রাস্তাটি পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করতেন। অতিসম্প্রতী গবেষকদল এটির সন্ধান পেয়েছেন।

সৌদি সংবাদ সংস্থা এসপিআই-র তথ্য অনুযায়ী গবেষক হাম্মাদ সালিমি বলেন, ‘এই মহাসড়ক নির্মাণের সময় তায়েফ টু মক্কা চলাচল পথে ‘আল কুরা’ নামক পাহাড় বিঘ্নতা সৃষ্টি করে। ফলে হুসাইন বিন সালামা দুইটি সড়ক নির্মাণের আদেশ করেন। একটি উট ইত্যাদি চলাচলের জন্য অপরটি পদব্রজে যাতায়াতকারীদের জন্য। রাষ্ট্রের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নতির জন্য তিনি এই পদ্ধতি গ্রহণ করেন। চক্রাকৃতির সড়কটি পাহাড় অতিক্রম করা সহজ করে দেয়। তৎকালীন অনাধুনিক নির্মাণ যুগে এমন স্থাপনা নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা এবং নির্মাণ শিল্পের গৌরজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিল।’

হাম্মাদ সালিমি বলেন, ‘সড়কটিকে ছোট-বড় পাথরের সাহায্যে সমতল ও মসৃণ করে দেয়া হয়েছিল, যার ফলে ‘আল হুদা’ পাহাড়ের চূঁড়ায় একত্রিত হওয়া সিঁড়িগুলি থেকে রাস্তাটি স্পষ্ট দেখা যেত। তিনি আরো বলেন, ১৯৬০ সালে বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজের শাসনামলে গাড়ি চলাচলের জন্য তৃতীয় আরেকটি সড়ক নির্মাণ করা হয়। তিনি বলেন, সবগুলি রাস্তাই গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্মৃতিময় স্থাপনা। এগুলিকে সংরক্ষণ করা জরুরি। কারণ, এগুলি ‘আল কুরা’ পাহাড়ের অংশ এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির সম্পূরক।’

আরবের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও লেখক সালেহ আল জাদি বলেন, ‘সাধারণ মানুষেরা আরবের বিখ্যাত দুই শহরের মাঝে চলাচলের জন্য পাথরের উক্ত সড়কটি ব্যবহার করতেন। আনুমানিক তিন দিন চলাচল পরিমাণ এর দূরত্ব। এর মাঝামাঝি অবস্থানে আরেক প্রসিদ্ধ এলাকা ‘আর রওকব’ অবস্থিত। তিনি আরো বলেন, হিজরি পঞ্চম শতাব্দির (১০০৯-১১০৬ খ্রিস্টাব্দ) ইতিহাস গ্রন্থসমূহে রাস্তাটির আলোচনা পাওয়া যায়।’ গবেষক আল কাতামি এই ঐতিহাসিক স্থাপনা রক্ষার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
(সূত্র: উর্দু নিউজ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *