কুরআন শরিফে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ‘হে মুমিনগণ! রসুলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রতি দরুদ পাঠ কর এবং তাঁর প্রতি বেশি বেশি সালাম পেশ কর।’
দরুদের অনেক ফজিলতরয়েছে। এ সম্পর্কে কিছু হাদিস বর্ননা করা হল।
★ হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (ﷺ)বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তার প্রতি ১০ বার রহমত প্রেরণ করবেন।’ -মুসলিম
আল্লাহর পক্ষ থেকে একবার একটি রহমত অবতীর্ণ হওয়া পুরো সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট।
★ হযরত সাখাবি (রহ.) হযরত আমের বিন রবিয়া (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, রসুল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তার ওপর ১০ বার দরুদ পাঠ করবেন। এখন তোমার ইচ্ছা ও অধিকার রইল যত কম পাঠ কর বা যত বেশি পাঠ কর।’ এ হাদিসটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকেও বর্ণিত হয়েছে। তবে তাতে এতটুকু বেশি শব্দও বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ ও ফেরেশতারা তার প্রতি ১০ বার দরুদ পাঠ করেন।
★ হযরত আবু তালহা আনসারি (রা.) বলেন, ‘একবার রসুলুল্লাহ (ﷺ) অত্যন্ত আনন্দ ও খুশির সঙ্গে আমাদের সামনে এলেন। তখন তাঁর চেহারা খুশির নুরে ঝলমল করছিল। সাহাবায়ে কিরাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! আজ আপনার চেহারা খুশিতে ঝলমল করছে এর কারণ কী? তিনি বললেন, তোমাদের কথা ঠিক। আমার কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এই মর্মে সুসংবাদ এসেছে যে, আপনার উম্মতের কেউ যদি আপনার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তার জন্য ১০টি নেকি লিখবেন ও ১০টি গুনা ক্ষমা করে দেবেন এবং ১০ গুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ দরুদ পাঠের কি বিশাল ফায়দা। অথচ দরুদ পাঠ করতে এক মিনিটও লাগে না। ফজিলত জানা না থাকায় অনেক সময় আমল করতেও ভালো লাগে না।
★ হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রসুল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এই শব্দে দোয়া করবে তার এত বেশি নেকি হবে যে, ৭০ জন ফেরেশতা ১ হাজার দিন পর্যন্ত লিখতে লিখতে অপারগ হয়ে যাবে। দোয়াটি এই- সুবহানাল্লাহ। এত ছোট দরুদের এত বিশাল ফায়দা।’
দরুদ পড়ার ফজিলত সমুহ:
১. দশটা গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।
২. দশটা রহমত দান করা হয়।
৩. দশটা মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়।
৪. ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করে।
৫. রাসূল (ﷺ) এর কাছে দুরুদ পাঠকারীর নাম ও বাবার নাম উপস্থাপন করা হয়।
৬. রাসূল (ﷺ) স্বয়ং তার জন্য দু’য়া করেন।
৭. সমস্যা ও দুশ্চিন্তা দূর হয়।
৮. রাসূল (ﷺ) এর শাফায়াত লাভ।
উসমানি খিলাফতের শেষ খলিফা আব্দুল হামিদ প্রতিদিন রাসূল (ﷺ) এর উপর দুরুদ পাঠ করে ঘুমাতেন কিন্তু এক রাতে তিনি ব্যস্ততার কারণে তা করতে পারেন নি। অপর দিকে উসমানি খিলাফতের এক ব্যক্তি ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েন। তাই তিনি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যেনো তার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্হা হয়। এক রাতে তিনি স্বপ্ন দেখলেন স্বয়ং রাসূল (ﷺ) তাকে বলছে তুমি আব্দুল হামিদের কাছে যাও সে তোমার ঋণ পরিশোধ করবে। আর তাকে বলবে আমার আব্দুল হামিদ গতকাল আমার শানে দুরুদ পাঠ করেনি।
আব্দুল হামিদ এই কথা শুনে খুবি মর্মাহত হলেন এবং ওই ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করেও আরও অনেক স্বর্ণ মুদ্রা দান করে দিলেন। রাসূল প্রেমের কাছে দুনিয়ার সকল সম্পদ ক্ষুদ্র হয়ে গেল। আসুন ভাই উঠতে, বসতে, সুযোগ পেলেই সেই রাসূলের শানে দুরুদ পাঠ করি যিনি আপনার শাফায়াতের কারন।
সবচেয়ে ছোট দরূদ হচ্ছে এটি : (ﷺ) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ যা পাঠের মাধ্যমে সালাত ও সালাম পাঠের হুকুম আদায় হয়ে যায়।
আল্লাহ তায়া’লা আমাদেরকে বেশি বেশি দরুণ পাঠকরার তৌফিক দান করু।।