দৈনন্দিন জীবনে বহু সুন্নত এমন রয়েছে, যার উপর আমল করা আমাদের পক্ষে কঠিন কিছু নয়। একটু সচেতন হলে খুব সহজেই আমরা সেগুলো পালন করতে পারি। তবে এর মধ্যেই কিছু সুন্নাত এমন রয়েছে, অজ্ঞতা বা অবহেলার কারণে যেগুলো আমাদের থেকে ছুটে যায়। এরকম একটি সুন্নসত হচ্ছে মিসওয়াক।
মিসওয়াক এর ব্যাপারে হাদিস শরীফে অনেক ফজিলত রয়েছে।
রাসুলে পাক (সাঃ) ইরশাদ করেন যদি আমার উম্মতের জন্য কঠিন না হত, তাহলে প্রতি নামাযের সময় মিসওয়াক করাকে আমি অপরিহার্য করে দিতাম। বুখারী-৮৮৭; মুসলিম-২৫২
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে। রাসুল (সাঃ) বলেন, হযরত জিব্রাঈল (আঃ) আমার নিকট যতবার আগমন করেছেন ততবারই মিসওয়াক করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মুসনাদ আহমদ-২২২৬৯; মিশকাত শরীফ- ১/৪৫
মিসওয়াকের সত্তরটি উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট ফায়দা হচ্ছে মউতের সময় কলেমা নসীব হওয়া আর এ গুরুত্বপূর্ণ আমলটির বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে যা নিম্নে প্রদত্ত হলঃ
যে সকল সময় মিসওয়াক করা সুন্নাত ।
১. অজুর সময় মিসওয়াক করা।
২. গাছের ডাল দ্বারা মিসওয়াক করা।
৩. মিসওয়াক অর্ধহাত লম্বা এবং আঙ্গুলের চেয়ে মোটা না হওয়া।
৪. মিসওয়াক করার সময় তা ধরার নিয়ম হচ্ছেঃ ডান হাতের কনিষ্ঠা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি মিসওয়াকের নিচে রাখবে। অবশিষ্ট আঙ্গুল মিসওয়াকের উপরে রাখবে। ফতওয়ায়ে শামী- ১/১৪৪
৫. দাঁতের উপরের পাটিতে প্রথমে তিনবার, অতঃপর বামদিকে তিনবার। মাওয়াহিবুল লাদুনিয়া
৬. মিসওয়াক করার পূর্বে তা ভিজিয়ে নেওয়া।
৭. নবীজী সা. দাঁতের প্রস্থে মিসওয়াক করতেন।বায়হাকি
৮. জিহ্বাহর দৈর্ঘ্যেও মিসওয়াক করা সুন্নাত। তহাবী
৯. হটাৎ কখনো গাছের ডাল উপস্থিত না থাকলে হাতের আঙ্গুল দ্বারা দাঁত পরিস্কার করা।
মারাকিল ফালাহ ৩৭-৩৮
যে সকল সময় মিসওয়াক করা মুস্তাহাব।
১. নিদ্রা হতে জাগ্রত হওয়ার সময়।
২. উযু করার সময়।
৩. কুরআন শরীফ পাঠ করার পূর্বে।
৪. হাদীস শরীফ পড়া ও পড়ানোর পূর্বে।
৫. নামাযে দাঁড়ানোর পূর্বে ( যদি উযু অনেক আগে করে থাকে)।
৬. কা’বা গৃহে বা হাতীমে কা’বায় প্রবেশের পূর্বে।
৭. আল্লাহর যিকিরের পূর্বে।
৮. মুখে দুর্গন্ধ হলে।
৯. স্ত্রী সহবাসের পূর্বে।
১০. আহার গ্রহনের পূর্বে।
১১. নিদ্রায় যাওয়ার পূর্বে।
তারগীব ওয়াত তারহীব- ১/১৬৮