
শিশুরা রোজা রাখতে চাইলে তাদের নিষেধ করা যাবে না। কারণ সাহাবায়ে কিরাম (রা.) তাদের ছোট ছোট নাবালেগ সন্তানদের রোযা রাখাতেন, মাসজিদে নিয়ে যেতেন এবং তাদের জন্য তুলা, পশম ইত্যাদির খেলনা বানিয়ে দিতেন। রোজা অবস্থায় (দিনের শেষভাগে) ক্ষুধায় কান্না করলে তারা তাদের শিশুদেরকে খেলনা দিতেন। ওরা খেলনা পেয়ে খেলতো আর খাবারের কথা ভুলে যেতো।(সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৯৬০, সহিহ মুসলিম,হাদিস নং ১১৩৬)
যারা নিষেধ করেন রোযা রাখতে দেন না তাদের ব্যাপারে আলিমগণ কঠিন কথা বলেছেন। শায়খ মুহাম্মাদ বিন সলিহ আল উসাইমিন (রাহ.) বলেন, ‘‘যে অভিভাবক নাবালেগ শিশুসন্তানের সিয়াম পালন থেকে নিষেধ করেন অথবা এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করেন, তিনি তাদের জন্য জালেম হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং নিজের জন্যও। হ্যাঁ, যদি তারা সাওম (রোজা) পালন শুরু করে দেওয়ার পর তিনি দেখতে পান যে, সাওম পালনে তাদের ক্ষতি হয়ে যাবে, তখন তাদেরকে তা থেকে নিষেধ করায় কোন অসুবিধা নেই।
[সূত্র: রমযান মাসের ৩০ আসর, শায়খ উসাইমিন (রাহ.), পৃষ্ঠা: ৬২]
বাচ্চাদের উপর রোজা রাখা জরুরি না। তবে আমাদের পূর্বসূরি নেককারদের অনুসরণে অভিভাবকগণ নিজ নিজ নাবালেগ সন্তানকে সাওমের চর্চা করাবেন, যাতে বালেগ (Adult) হওয়ার পর তাদের জন্য রোজার মত কষ্টসাধ্য ইবাদত করা সহজ হয়ে যায়। শহরের অনেক তরুণ আজ রোজা রাখে না; কারণ শিশু অবস্থায় তাদের রোজার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি।
উপরে বর্ণিত হাদিস থেকে কেউ যেন এ ধারণা না করেন যে, সাহাবাদের বুঝি দয়া-মায়া কম ছিলো! ব্যাপারটি সেরকম নয়।
প্রথমত: শিশুরা নিজেরাই স্বপ্রণোদিত হয়ে সাহরি খেত, রোজা রাখতো, কিন্তু ক্ষুধা লাগলে শিশুরা তো কান্না করবেই। তাদের কী আর সাওমের সেই অনুভূতি আছে?
দ্বিতীয়ত: এটাও হতে পারে যে, বাচ্চারা রোযা না রাখতে চাইলেও মাঝেমধ্যে তাঁরা রাখাতেন, যাতে আল্লাহর আনুগত্যের অভ্যাস হয়, পরবর্তীতে ইবাদত পালন সহজ হয়।